দ্য আজাদ স্টাফ
অবক্ষয়, অনৈতিকতার লাগামহীনতা : লেখক ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা
অবক্ষয়, দুরাচার, অনৈতিকতার যে ব্যাপক বিস্তার সমাজে আজ ঘটছে তাতে এ সত্যকে আর অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই- রাষ্ট্রযন্ত্রে মারাত্মক বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। তার উদাহরণ হিসেবে বলতে হয়, সমাজের দর্পণ খবরের কাগজে প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে বিভিন্ন অপসংবাদ। খুন, ধর্ষন, রাহাজানি এবং বিভিন্ন পৈশাচিকতা। মানবাধিকারের এমন গুরুতর দুর্দিনে সাধারণভাবে এটাই উপলব্ধিতে আসছে যে দেশের মানুষ যেন দুঃসহ এক নরক রাজ্যের অধিবাসী। সমাজের এমন অধোগতি হঠাৎ একদিনেই ঘটেনি। দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমান্বয়ে আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। বর্তমান ফ্যাসিষ্ট শাসকরা সজ্ঞানে এসব দৃষ্টি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে, যাতে স্বেচ্ছাচারিতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোনো অন্তরায় না ঘটে। এই মনোভাবের কারণেই আজকে সমাজে কতৃত্ববাদিতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর এমন শাসক সবসময় নিজ গোষ্ঠীর স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েই চলে। এখানেও তাই চলছে। সংখ্যাগরিষ্ঠের আশা-আকাঙ্খার প্রতি কোনো গুরুত্বই দেয়া হচ্ছে না। এই কারণেই দূর্নীতির শাখাপ্রশাখা যেভাবে বিস্তার লাভ করেছে বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে সেটা কেবল তাদের জন্য সতর্কবাণী নয়, এর পরিণতিতে সদল-বলে পুরো দেশবাসীকে অতলে পৌঁছে দিতে পারে খুব সহসা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রায় পঞ্চাশ বছর হতে চলছে। এই সময়টা কোনো দেশের জন্য কম সময় নয়। কিন্তু এ সময়ে মূল্যবান স্বাধীনতা ছাড়া কি অর্জন করতে পেরেছি আমরা। সে হিসেব যদি নেয়া হয় প্রাপ্তির খাতায় তেমন কিছু যোগ করা যাবে না। দেশের শাসনব্যবস্থায় না কোনো স্থিতিশীলতা না কোনো বিশুদ্ধতা যোগ হয়েছে। এখনো সেই দূর অতীতের মতো গণতন্ত্রের জন্য হাহাকার রয়েছে। রাষ্ট্রের তিন অঙ্গ নির্বাহি বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের পথচলা নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট নয়। দেশে এক বিরাটসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছে। ওদের দুঃখকষ্ট নিয়ে ভাবার কেউ নেই। এখনো মানুষ মৌলিক পাঁচ অধিকার- অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান এবং চিকিৎসা হতে বঞ্চিত রয়েছে। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আশার বাণী শুনতে শুনতে মানুষের কান ঝালাপালা, কিন্তু প্রয়োজন মিটছে না দীর্ঘ চার যুগেও। জোরজবরদস্তি এবং বিবিধ মেকানিজম করে ক্ষমতায় প্রায় এক যুগ ধরে অধিষ্ঠিত বর্তমান ফ্যাসিষ্ট শাসকগোষ্ঠী দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খাকে দিনদিন সুদূরপরাহতই করছে। অধিকাংশ মানুষের সম্মিলিত সাহসী ও মেধাবী সম্মিলন এবং সুদৃঢ় নেতৃত্ব ছাড়া আপাতত এই দুর্দশা থেকে উদ্ধারের কোনো পথই খোলা নেই। লেখক ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা