দ্য আজাদ স্টাফ
আদর্শ প্রাইমারী স্কুলে তারেক রহমান
ওয়াসিম ইফতেখার
২০০৪ সারা দেশের মত পটিয়াতে হয়েছিল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রতিনিধি সম্মেলন। সম্মেলনের নেতৃত্বে ছিলেন তারেক রহমান।
তাঁর জনপ্রিয়তা আজকের মতই আকাশচুম্বী ছিল। আজকের পৃথিবীর যে-কোন অ-নির্বাচিত, সেল্ফ ডিক্লেয়ার্ড সরকার প্রধানের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। সেই চম্বুকসম আকর্ষণ ধারণ করে তারেক রহমান এলেন পটিয়া আদর্শ স্কুলের ছোট্ট মাঠে।
হুম, তখন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল খুব কঠোর। তবে লিডারের এইটাই কথা, নিরাপত্তা নাম করে নূন্যতম হেনস্তা চলবে না, কারো স্বাভাবিক জীবন যাত্রাতে বিন্দুমাত্র ছেদ ঘটানো যাবে না। ট্রাফিক সিগনালে মৃত্যু-পথ যাত্রীর এম্বুলেন্সে আটকে যাবেনা। স্কুল অফিসের ব্যস্ত যাত্রীদের পথরোধ করে নাভিশ্বাস তুলা যাবে না।
তাই সেদিন কোন টি-ষ্টল ভেঙ্গে ফেলা হয়নি, পার্শ্ব রাস্তা’র ফুলওয়ালি মেয়ে’টা নিরাপত্তা হুমকি হয়ে ওঠে-নি। সদ্য দাড়ি গজানো মাদ্রাসা’র ছেলেরা সম্ভাব্য জঙ্গি চিহ্নিত হয়নি।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পুত্র’র নিরাপত্তা’র কথা বলে সেই শহরে কোনো দোকানপাট বন্ধ হয়-নি, রিকশা, গাড়ি, ভ্যানের চলাচল রুদ্ধ হয়নি। সার্কিট হাউস আর শহরের কাঁনাগলিতে বসে-নি কোন গতিরোধক।
নিরাপত্তা উন্মাদনা হেতু কোনো বাড়িয়ালাকে কেউ বলে নি.. আপনার ঘরে আগামী তিনদিন ভাড়াটিয়া আসতে পারবে না, ছাত্রমেসে চিহ্নিত করা হয়-নি বহিরাগত-কে ।
কোন দোকান/রাস্তা/প্রাচীর ভাঙ্গা তো দূরের কথা পটিয়া প্রাইমারী স্কুল গেইটের সামনের ঝাল-মুড়ি, আচার আর বায়স্কোপওয়ালা যারা ফেরি নিয়ে ফিরতো, তারা সেদিন স্থানচূত হয় নি, গরীবের পেট জিয়া পুত্র’র নিরাপত্তা অজুজাতে উপস যায় নি।
স্কুল রাস্তার ওপাশে খোকা বাবুর দোকান। খোকার বিক্রি-বাট্টা ধুমসে জমে ওঠে যখন তারেক রহমান স্কুল প্যান্ডেলে বসেন।
গনমানুষের সহ-অবস্থানই ছিল তার নিরাপত্তা বেষ্টনী, ফুলওয়ালিরাই হয়ে উঠেছিল তার ভ্যানগার্ড। মানুষের ভোট ভাতের জন্য রাজনীতি করা, মানুষের নেতারা এমনই হয়ে থাকেন।
এখন তো দেশ ভরা VIP, চারিদিকে উন্নয়নের চৌবাচ্চা উপচে পড়ছে। মানি মানুষের ভিড়ে অতি সাধারণের ৮টা ৫টা কেরানী জীবন চিড়েচ্যাপটা।
শহরে তাল-পাতার সেপাই আসলেও পৌরসভার বানিজ্য বন্ধর ফরমান জারি হয়, খাল ভরাট করে রাস্তা করা হয়। পটিয়া সরকারী কলেজের প্রাচীর ভেঙেও এদের নিরাপত্তা দেয়ার উদাহরণ আছে। একের পর এক মহামান্য হুকুমতে জন-জীবন অস্থির তটস্থ এ্যটেনসন মোডে চলে যায়। টনটনে সব সিকিউরিটি মেজারমেন্টে পান থেকে চুন খসে না।
সব হিসাব অবশ্য মিটে যাবে একদিন। সেই ফুটপাত, সেই হকার, রিকশাআলা, ঝালমুড়ি আর খোকাবাবুরা ইতিহাসের মাইনফিল্ডে রাজসাক্ষী হবে।
ওগো তোমার শেষ বিচারের আশা আমি বসে আছি গো কি যে আমার পাওনা দেনা তুমি ছাড়া কেউ জানে না….
#পটিয়া পৌরসভা ছাত্রদল কর্মীর ওয়াল থেকে নিয়ে আমার মত এডিট করেন ওয়াসিম ইফতেখার,সম্ভবত ২০১২ সালের।