দ্য আজাদ স্টাফ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে যুবদলের গ্রুপিং মিটাতে বসা সাংগঠনিক সভা পন্ড করে দিয়েছে পুলিশ। এসময় যুবদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওা-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাসহ ১৫ জনের বেশী নেতাকর্মী আহত হন বলে দাবী করা হয়, নবীনগর যুবদলের পক্ষ থেকে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার আলীয়াবাদ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
যুবদল নেতারা দাবী করেন, পুলিশের লাঠি চার্জের ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক টিম প্রধান জাকির হোসেন সিদ্দিকী ও জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক রাশেদ, তাজুল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
নবীনগর উপজেলা যুবদলে দীর্ঘদিন থেকেই বিভক্তি ও গ্রুপিং ছিল। এই গ্রুপিং মিটাতে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এসেছিলেন নবীনগরে। নবীনগর উপজেলা যুবদলের সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, সাংগঠনিক কর্মকান্ড চাঙ্গা করতে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান মুকুলের নেতৃত্বাধীন একটি গ্রুপ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এবং উপজেলা যুবদলের এক নম্বর যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ হোসেন রাজুর নেতৃত্বাধীন অপর গ্রুপ নবীনগর মহিলা কলেজে পৃথক দুটি সাংগঠনিক সভা আহবান করে। এনিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে বৃহষ্পতিবার রাতে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় দু-গ্রুপকে একত্র করে সভা করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
শুক্রবার সকালে উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সভায় যোগ দিতে যুবদলের কুমিল্লা অঞ্চলের সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বে থাকা যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ঢাকা থেকে একটি টিম বৃহস্পতিবার রাতেই নবীনগর পৌছায়। কিন্তু অনুমতি না নেয়ার অজুহাতে নবীনগর থানা পুলিশ শুক্রবার সভা করতে বাধা দেয়। পুলিশের বাধার পর যুবদলের বিভক্ত নেতাকর্মীরা দিনভর ঘরোয়া বৈঠক শেষে বিকেলে পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামে সাবেক বিএনপি নেতা মরহুম মদন মিয়া মেম্বারের বাড়িতে দুই গ্রুপ একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সাংগঠনিক সভায় মিলিত হয়। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে।
পুলিশের অ্যাকশনে পন্ড হয়ে যায় যুবদলের এই সাংগঠনিক সভা। এসময় পুলিশ ও যুবদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। স্থানীয় বাজারে আতঙ্ক দেখা দেয় মানুষের মাঝে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। যুবদলের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়, অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান মুকুল বলেন, আমরা কোন সভা করিনি। তারপরও পুলিশ আমাদের কর্মীদেরকে বেধড়ক পেটায়। এতে কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন সিদ্দীকিসহ জেলা ও উপজেলার আমাদের কমপক্ষে ১৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সাংগঠনিক সভা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বাধায় করতে পারিনি। বিকেলে আমাদের এক নেতার বাসায় বসে কারা কারা প্রার্থী- তাদের তালিকা তৈরি করার সময় পুলিশ এসে অতর্কিতভাবে হামলা করে। নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমীন বলেন, সভা করার কোন অনুমতি না থাকার পরও এই করোনা কালে যুবদলের নেতারা বিকেলে একটি বাড়িতে সাংগঠনিক সভা করায় পুলিশ বাধা দিয়েছে। তবে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন বলেন গোপনে এক বাড়িতে তারা (যুবদল নেতাকর্মী) বসছিল। পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে যায়। পুলিশ দেখেই তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে সেখান থেকে চলে যায়।