দ্য আজাদ স্টাফ
বর্তমান বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একমাত্র প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া : ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
আমরা নিশ্চয়ই এটা ভুলে যাইনি, স্বৈরাচারী এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান সরকারি দল নির্বাচিত সরকার হটিয়ে তার ক্ষমতা দখলকে সানন্দে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেছিল তারা অসুখী নন। আমরা ১৯৮৬ সালকেও ভুলে যাইনি।
নির্বাচনে অংশ নিয়ে স্বৈরাচারী এরশাদকে বৈধতা দিয়ে আরও অনেক দিন ক্ষমতায় রেখে দেওয়ায় তাদের যে চেষ্টা সেটি কাজ করেনি একজন খালেদা জিয়ার আপসহীন গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কারণে।
এরপর বর্তমান সরকারের ‘আন্দোলনের ফল’ এক এগারোর সরকারের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিদেশে চলে গেলেও, খালেদা জিয়া তাতে রাজি হননি। অসাংবিধানিক সরকারের বিরুদ্ধে আবার রুখে দাঁড়ান বেগম জিয়া, যেটা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফিরে আসতে সাহস জোগায়। জনগণের সামনে আবারও প্রমাণ হয়, বর্তমান বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একমাত্র প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার প্রতি স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদের ভীতি ছিল, আছে সব সময়ই। তাই রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী বা কর্তৃত্ববাদী শাসন চালিয়ে যাওয়ার পূর্বশর্তই হচ্ছে তাকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করা। বেগম জিয়ার এই চরিত্র এরশাদ জানতো, জানতো মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং জানে বর্তমান সরকারও। তাই মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়া আজ কারারুদ্ধ।
কীভাবে মিথ্যা অভিযোগে বেগম জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, সেটার খুঁটিনাটি তথ্য এই দেশের মানুষ জানে। সেই বিষয়ে তাই আর বিস্তারিত আলোচনা অপ্রয়োজনীয়।
শুধু এটুকু বলি, একজন আইনজীবী হিসেবে আমি নিজে দুদকের মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত অভিযুক্তদের মামলায় কাজ করেছি এবং আপিল গ্রহণকালেই জামিন পেতে দেখেছি।
স্থায়ী জামিন নিয়ে তাদের অনেকেই এখন বিদেশেও আছেন। এটা যদি হয় একজন সাধারণ অভিযুক্তের ক্ষেত্রে, তাহলে বেগম জিয়ার মতো একজন মানুষের ক্ষেত্রে কী হওয়ার কথা ছিল?
আমার আইনের জ্ঞান, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বেগম জিয়ার মামলার মেরিট, তার শারীরিক অবস্থা, সামাজিক অবস্থান, বয়স, জেন্ডার সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তিনি তাৎক্ষণিক জামিন লাভের যোগ্য। জামিন পাওয়া তার অধিকার।
আর সবকিছু বাদ দিলেও বর্তমানে তার যে শারীরিক অবস্থা, শুধু সেটাও যদি বিবেচনায় নিই, তাহলে আদালত যদি ন্যূনতম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতেন, তাহলে তাকে জামিন দিতে বাধ্য হতেন।
গ্রেফতারের পর যখন আদালত থেকে তাকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছিল তখনও তিনি সুস্থ শরীরে হেঁটে গাড়িতে ওঠেন, তারপর ক্রমান্বয়েই তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। যেহেতু কারাগারে তিনি সম্পূর্ণ সরকারের হেফাজতে ছিলেন,
সুতরাং তার স্বাস্থ্যের এই ক্রমাবনতির জন্য একমাত্র দায়ী করা যায় সরকারকে।