দ্য আজাদ স্টাফ
বাংলাদেশের লজ্জা, ভারতের রেকর্ড
মুশফিকুর রহিমের দৃঢ়তায় ইডেন টেস্ট কোনোমতে গড়িয়েছিল তৃতীয় দিনে। রবিবার নতুন দিনে ইনিংস পরাজয় এড়ানোর জন্য হলেও বাংলাদেশকে দুর্দান্ত কোনো গল্প লিখতে হতো। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে মাঠ ছাড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেও ফিরে আসতে হতো। কিন্তু হয়নি এর কিছুই। নতুন দিনে মাত্র ৪৭ মিনিটে ৮.৪ ওভারে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ।
ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচটি ইনিংস ও ৪৬ রানে জিতে নিল ভারত। গড়ল রেকর্ডও। আর বাংলাদেশ সোয়া দুই দিনে হারের লজ্জায় পুড়ল।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস এদিন গুটিয়ে যায় ১৯৫ রানে। প্রথম ইনিংসে সফরকারীরা ১০৬ রান করার পর ভারত ৯ উইকেটে ৩৪৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল। ইন্দোরে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ১৩০ রানে জিতেছিল ভারত। দুই ম্যাচের সিরিজে তাই হোয়াইটওয়াশ হল মুমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন দল।
ভারতের এটি টানা চার টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয়। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে এই কীর্তি দলটির। এ ছাড়া নিজেদের ইতিহাসে টানা ৭ ম্যাচ জয়ের নজিরও গড়েছে তারা। এর আগে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ২০১৩ সালে টানা ৬টি টেস্ট জিতেছিল ভারত।
অধিনায়ক হিসেবে কোহলি গড়েছেন টানা ১২টি সিরিজ জয়ের কীর্তি। এ ছাড়া অধিনায়ক হিসেবে ৪টি টেস্ট সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিলেন তিনি।
এই সাফল্যে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৭ ম্যাচে ৩৬০ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে ভারত। বলা যায় এখন পর্যন্ত সবার ধরাছোঁয়ার বাইরেই তারা।
৬ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে রবিবার তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম আগের দিন অপরাজিত ছিলেন ৫৯ রানে। এদিন আর ১৫ রান যোগ করতে পেরেছিলেন তিনি। নতুন ব্যাটসম্যান ইবাদত হোসেনকে নিয়ে দিন শুরু করেছিলেন। ইবাদত রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন।
এরপর আল-আমিন হোসেন ও মুশফিকের ৩২ রানের জুটি হলো। কিন্তু মুশফিককে উমেশ যাদব ফিরিয়ে দিলে বাংলাদেশের পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ব্যক্তিগত ২১ রানে আল-আমিন যাদবের শিকার হতেই পরাজয় মানতে হয় বাংলাদেশকে।
আগের দিন ৩৯ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া মাহমুদউল্লাহ এদিন আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। ফলে ৪১.১ ওভারেই শেষ বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
ভারতের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে উমেশ যাদব নিয়েছেন ৫ উইকেট। ১৪.১ ওভার বল করে ৫৩ রান খরচ করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া ইশান্ত শর্মা দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন ৪ উইকেট।
অর্থাৎ দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ৯টি উইকেটই পেয়েছেন ভারতের পেসাররা। প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট পেলেও মোহাম্মদ শামি উইকেট শূন্য ছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। ম্যাচে ৭৮ রান খরচায় ৯ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হয়েছেন ইশান্ত শর্মা।
এর আগে শনিবার ভারত ৯ উইকেটে ৩৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ ব্যাটিং নেমে ১৩ রানে হারিয়ে ফেলেছিল ৪ উইকেট। দুই দিনেই ম্যাচ শেষ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তখন। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ৬৯ রানের জুটি গড়ে সেই ধাক্কা সামলান।
মাহমুদউল্লাহ মাঠ ছাড়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। তাতেই খেলা তৃতীয় দিনে গড়ায়। মিরাজ করেছিলেন ১৫ রান। আর দ্বিতীয় দিন দিনের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ১১ রান করেন তাইজুল।
ম্যাচসেরার সঙ্গে সিরিজ সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন ইশান্ত শর্মা।
উৎসঃ দেশ রুপান্তর