দ্য আজাদ স্টাফ
শূন্য কোষাগার, সামাল দিতে ২৮ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের পথে কেন্দ্র!
লোকসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ₹১.০৫ লক্ষ কোটি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই খাতে সরকারের ঘরে ₹১৭,৩৬৪ কোটি ঢুকেছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
ডেস্ক রিপোর্ট : কেন্দ্রে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে বল্গাহীন আর্থিক উদারিকরণের নীতি নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ফাঁকা রাজকোষে অর্থের যোগান অব্যহত রাখতে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যেই সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোট ২৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার স্ট্যাটিজিক অংশিদারিত্ব বিক্রির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে কেন্দ্র। এই তালিকায় আছে এয়ার ইন্ডিয়ার নাম। সোমবার এমনই জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
এদিন লোকসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ₹১.০৫ লক্ষ কোটি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই খাতে সরকারের ঘরে ₹১৭,৩৬৪ কোটি ঢুকেছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ার ইন্ডিয়া এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের বিক্রির প্রক্রিয়া সরকার শেষ করতে চায় বলে শনিবারই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তালিকা যে এখনেই শেষ নয়, তার ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি করে চলতি আর্থিক বছরে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। শুধুমাত্র সরকারি সংস্থার শেয়ার বেচে এই বছর ১,০০০,০০০,০০০,০০০ টাকা (১ ট্রিলিয়ন) ঘরে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান বছরে বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির ৩.৩ শতাংশের মধ্যে বেঁধে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। কিন্তু মন্দার কারণে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় সরকার সেই টার্গেট পূরণে কতটা সফল হবে, তা নিয়ে জোর সংশয় আছে।
চলতি আর্থিক বছরে ₹১৩.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা প্রত্যক্ষ আয়ের লক্ষমাত্রা নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই খাতে মাত্র ₹৬ লক্ষ কোটি হয়েছে। অর্থাৎ চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসে টার্গেটের ৫০ শতাংশেরও কম অর্থ কেন্দ্রীয় রাজকোষে জমা পড়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের (CBDT) পিসি মোদী। পাশাপাশি শিল্প উৎপাদনের হালও বেহাল। গত সেপ্টেম্বর মাসে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৪.৩ শতাংশ হ্রাস হয়েছে। ২০১২ সালের এপ্রিলের পরে এই প্রথম দেশের শিল্প ক্ষেত্রের এমন হাল হল। শুধু তাই নয়, এই নিয়ে পরপর দু-মাস শিল্প উৎপাদনের উর্ধ্বগতি ধাক্কা খেল। অগস্ট মাসে শিল্প উৎপাদনে সূচক ১.১ শতাংশ কমে গিয়েছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪.৬ শতাংশ হারে কলকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলে দেশের আর্থিক অবস্থা নিয়ে চূড়ান্ত বিপাকে মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক ঘাটতি সামাল দিতে কেন্দ্রের একমাত্র ভরসা বিলগ্নিকরণ।