দ্য আজাদ স্টাফ
১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব খুলে দিয়েছে, ফারাক্কা আজ হাসিনা বিনা শুল্কে বাংলাদেশের দু’টি পোর্ট দিয়েছে ভারতকে৷
শামসুল আলম
১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব দেশের কথা এবং জনগনের কথা না ভেবেই ভারতেকে ৭দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা চালু করতে দিয়ে দেশের যে সর্বনাশটা করেছে, তা গত ৪৫ বছরেও আর শোধরানো যায়নি। কিন্তু ফারাক্কা দেয়ার পরেও জানে বাঁচতে পারেননি।
সেই শেখের কন্যা এবারে বিনা শুল্কে বাংলাদেশের দু’টি পোর্ট ব্যবহার করতে দিয়েছে ভারতকে। মালামাল আনা নেওয়া করতে দিয়েছে বাংলাদেশের রাস্তা ব্রিজ ব্যবহার করে- কিন্তু কোনো ফি দিতে হবে না। সড়কপথেও তারা ট্রানজিট নিবে, বিনা মাশুলে! তার মানে কি- বাংলাদেশ যে আলাদা একটি রাষ্ট্র, তার অস্তিত্ব আর রাখলো?
এরপরে এই সমুদ্রপোর্ট এবং ট্রানজিট ব্যবহারের জন্য এদেশের স্থাপনায় হাজার হাজার ভারতীয়রা কাজ করবে। তাদের পাহারা দিতে কি আবার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ফৌজের মত এদেশে বাহিনীও পাঠাবে? নাকি র-প্রশিক্ষিত দেশীয় বরকন্দাজরা পাহারা দিবে তাদের?
এসব বিষয়গুলি বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিরক্ষার সাথে জড়িত। তাই আগেভাগেই প্রতিরক্ষা বাহিনীকে মাজা ভেঙে দেয়া হয়েছে পিলখানায় এবং পরবর্তীতে শুদ্ধ অভিযানে। এরপরের ধাপে দিল্লিতে নিয়ে সিনিয়রদের মগজ ধোলাই করা হয়, এবং এক দশক ধরে নিচের দিকে দলীয় বিবেচনায় রিক্রুট ও পদোন্নতি দিয়ে ভরতে থাকে! দেশরক্ষা বাহিনীকে টাকা পয়সা, গাড়ি বাড়ি সহ সুযোগ সুবিধা, জমি ফ্লাট, বিদেশ ট্যুর, কন্ট্রাক্টরি, কর্পোরেট এবং সিভিলে চাকরি…..অর্থাৎ নানাবিধ প্রকৃয়ায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে প্রফেশনালিজম থেকে বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই এখন পোর্ট ট্রানজিট দেয়া এবং জাতীয় প্রতিরক্ষার সংকট এসব নিয়ে মাথা ঘামানো বা বাধা দেয়ার মত কোনো রিস্ক আর আপাতত নাই।
দেশে যখন চলছে বিনাভোটের লুটপাট শাসন, তখন রাজনীতিতে সুপরিকল্পিতভাবে ধস নামানো হয়েছে। জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তিকে পেশিশক্তি দ্বারা দমন করে রাখা হয়েছে। এখন রাষ্ট্রীয় গুম খুনের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে চায় না। জনগনের প্রতিনিধিত্বশীল কোনো সংসদ নাই, বিরোধী দল নাই প্রতিবাদ করার। নানা প্রকৃয়ায় রাজনীতিকে বন্দী করা ফেলা হয়েছে। খুব পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান ধংস করা হয়েছে। এ অবস্থায় রাজনীতিবিদদের গভীরভাবে ভাবতে যেভাবে জাতীয় স্থাপনা ও সম্পদ প্রতিবেশীকে বিলিয়ে দেয়া হয়েছে, তা পরাধীনতার শামিল। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকলে এসব করা যেত না।
এ পরিস্থিতিতে কোন্ প্রকৃয়ায় বাংলাদেশকে এই গভীর খাদ থেকে টেনে তোলা যায়, সেটাই হওয়া উচিত রাজনীতিবিদদের মূল কাজ। এটা করতে ব্যর্থ হলে ফারাক্কা বাধের মত চিরস্থায়ী ভাবে হারাতে হবে পোর্ট এবং সড়ক ও রেলপথ, অথবা সিকিমের ভাগ্যরবণ করতে হবে! সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তারা ভেবে দেখুন, মাথাটা বিক্রি করে দিয়ে শুধু কি নিজের চেয়ারটা ঠিক রাখবেন, নাকি দেশটাকে উদ্ধার করবেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য?
শামসুল আলম সাবেক সরকারি কর্মকর্তা